আমফানের পরে গত পরশু দিনই কাকদ্বীপে ‘ঘুলঘুলি’র তৃতীয় দফার কাজ সম্পন্ন হলো। কাকদ্বীপ রেল গেটের কাছাকাছি ট্রেন লাইনের দুপাশে বেশ কিছু বাড়ির জন্য ত্রিপলের ব্যবস্থা করা হলো। এদিন ছিল সুপ্রতিম, তাপস, তন্ময়, সুজন, ভীষ্ম, চিন্ময়, সোনুরা।
আমফানের ভয়াবহতায় বাড়িগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটারই কোনো অংশই বেঁচে নেই। যদিও ওগুলোকে ঠিক বাড়ি বলা যায় কিনা জানিনা, কয়েকটা বাঁশের উপর ত্রিপল চাপিয়ে পরিবারের পাঁচজন মিলে মাথা গোঁজার কিছু একটাকে যদি বাড়ি বলা যায় তবে তাই!… তার উপর আবার ভোটার লিস্টে নাম নেই, তাই সরকারি সুবিধে পাওয়া থেকেও বঞ্চিত ওরা… ইলেক্ট্রিসিটি কত ঘন্টা নেই ওখানে? ওরা তো সারাবছরই অন্ধকারে, তাই কত ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, গোনার বালাই নেই ওদের। কয়েকদিন আগেই বাড়ি বাড়ি ঘুরে সার্ভে করে আসার পরে সিদ্ধান্তে আসি যে, কোনো ভাবে খেয়ে বেঁচে নতুন করে বাড়ি বাঁধাই ওদের কাছে এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়। সামনে আবার বর্ষাকাল, তাই আবার ঘর বাঁধছে ওরা জোরকদমে। বাড়িগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দরকারি ৩১ টা পরিবারকে আমরা ত্রিপল দিতে পেরেছি, এতে হয়তো তাদের ঘরের একদিকের ছাউনিটা ঢাকা পড়ে যাবে কোনো মতে।
ওদেরই মধ্যে একটা বাড়ির মেয়ে, অনেক কষ্টে এ বছর মাধ্যমিকটা দিয়েছে, ভেবেছিল সব মিটে গিয়ে স্কুল খুললে ইলেভেনে ভর্তি হবে। আমফানে বাড়িটাই ভেঙে গেল, ভর্তির টাকাটাও লেগে গেল ঘর বাঁধতে। বাবাকে বলছে, “ওই দিক টা ভালো করে বাঁধন দাও বাবা, জল ঢুকলে বই গুলো ভিজে যাবে তো”।
আগামীদিনে আরও বেশ কিছু জায়গায় কাজের পরিকল্পনা রয়েছে, সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। কিন্তু আপনাদের সাহায্য ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব নয়। তাই শুধু শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখুন,মানসিক দুরত্ব নয়।এই কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়ান, যেমন ভাবে সম্ভব।